মুক্তভাষ ডেস্ক
নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিন নামের এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় র্যাব-৫-এর মাঠপর্যায়ে কর্মরত ১১ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ জন্য তাদের রাজশাহী ব্যাটালিয়নের সদর দফতরে ডাকা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) রাত ৮টায় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গত ২২ মার্চ ওই অভিযানে যারা ছিলেন, তদন্তের প্রয়োজনে সদর দফতরে তাদের ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে সেনাবাহিনীর একজন মেজর, পুলিশের এএসপিসহ অন্যান্য সদস্য ও গাড়িচালক রয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের র্যাব-৫-এর জয়পুরহাট সিবিসি-৩ কর্মস্থলে পাঠানো হবে।
সহকারী পরিচালক জানান, ওই ঘটনা তদন্তে র্যাব সদর দফতর গঠিত কমিটি এখন রাজশাহীতে অবস্থান করছে। কমিটি এই অভিযানে যুক্ত র্যাবের প্রত্যেক সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ঘটনার সত্যতা মিললে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে তদন্ত কমিটি।
এর আগে গত ২২ মার্চ রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে কর্মরত যুগ্ম সচিব এনামুল হকের অভিযোগে নওগাঁ থেকে ভূমি অফিসের কর্মী সুলতানা জেসমিনকে আটক করে র্যাব। চার ঘণ্টা পর তাকে অসুস্থ অবস্থায় নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় র্যাব। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। শুক্রবার সেখানে তার মৃত্যু হয়।
স্বজনরা অভিযোগ করেন, র্যাব হেফাজতে নির্যাতনে জেসমিনের মৃত্যু হয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে র্যাব বলছে, ৪৫ বছর বয়সী জেসমিনকে আটকের পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে তার মৃত্যু হয়।
জেসমিনের মৃত্যু: নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি সুজনের
নওগাঁয় আটক করার পর র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিন নামে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের এক কর্মচারীর মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে নওগাঁয় মানববন্ধন করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সকালে শহরের মুক্তির মোড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সুজনের নওগাঁ জেলা কমিটির আয়োজনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনা বিদ্যমান আইনের লঙ্ঘন। সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়ায় এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে। ফলে ঘটনাটির সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করে এর বিচার করতে হবে।
মানববন্ধনে সুজনের নওগাঁ জেলা কমিটির সহ-সভাপতি আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এ কে সাজু, আইন বিষয়ক সম্পাদক মিনহাজুল ইসলামসহ সংগঠনটির নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
বুধবার (২২ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুক্তির মোড় থেকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে এসে র্যাব সদস্যরা সুলতানা জেসমিনকে আটক করে নিয়ে যায়। এরপর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রথমে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (২৪ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়। সুলতানা জেসমিন নওগাঁ সদর উপজেলার চন্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন। তার নামে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ ছিল বলে দাবি করেছে র্যাব।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন