শনিবার, ২১ আষাঢ়, ১৪৩২ | ৫ জুলাই, ২০২৫ | ৯ মহর্‌রম, ১৪৪৭

Facebook Twitter Youtube
  • প্রচ্ছদ
  • সংবাদ বিশ্লেষণ
  • মতামত
  • শিল্প ও সংস্কৃতি
  • মুক্তচিন্তা
  • সম্পাদকীয়
  • সাক্ষাৎকার
  • সংযোগ
Menu
  • প্রচ্ছদ
  • সংবাদ বিশ্লেষণ
  • মতামত
  • শিল্প ও সংস্কৃতি
  • মুক্তচিন্তা
  • সম্পাদকীয়
  • সাক্ষাৎকার
  • সংযোগ

সিসাদূষণ বন্ধ হলে বাড়বে শিশু বুদ্ধিবলে

  • মুক্তভাষ ডেস্ক
  • সংবাদ বিশ্লেষণ

বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত লাখো শিশু সিসাদূষণের সংস্পর্শে আসছে। বাংলাদেশে সিসাদূষণ পৃথিবীর ইতিহাসে দূষণজনিত সমস্যার অন্যতম বড় একটি উদাহরণ। গবেষণায় উঠে এসেছে, শুধু বাংলাদেশেই সাড়ে তিন কোটি শিশুর রক্তে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় সিসা আছে। ইনস্টিটিউট অব হেলথ ম্যাট্রিক্স এভাল্যুয়েশনের (আইএইচএমই) মতে, সিসার কারণে বাংলাদেশে মৃত্যুহার বিশ্বে চতুর্থ।

বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত লাখো শিশু সিসাদূষণের সংস্পর্শে আসছে। বাংলাদেশে সিসাদূষণ পৃথিবীর ইতিহাসে দূষণজনিত সমস্যার অন্যতম বড় একটি উদাহরণ। গবেষণায় উঠে এসেছে, শুধু বাংলাদেশেই সাড়ে তিন কোটি শিশুর রক্তে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় সিসা আছে। ইনস্টিটিউট অব হেলথ ম্যাট্রিক্স এভাল্যুয়েশনের (আইএইচএমই) মতে, সিসার কারণে বাংলাদেশে মৃত্যুহার বিশ্বে চতুর্থ।

বিশ্বে প্রতি ৩ জন শিশুর ১ জনের সিসার মাত্রা বেশি। ৮০ কোটিরও বেশি শিশুর রক্তে উচ্চমাত্রায় সিসা আছে, যা গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বেশি। ২০২২ সালের ঢাকা শহরের ওপর করা সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে যে ৮০ শতাংশ শহুরে শিশুর রক্তে ৫ মাইক্রোগ্রাম/ডেসিলিটারের বেশি সিসা আছে, যা কিনা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ডের চেয়ে অনেক বেশি। দেশজুড়ে হওয়া আরেক গবেষণা বলছে যে গ্রামগুলোর ৩৪ শতাংশ শিশুদের রক্তে ৫ মাইক্রোগ্রাম/ডেসিলিটারের বেশি সিসা আছে। গবেষণা যা–ই বলুক, রক্তে এমন উচ্চমাত্রার সিসা কিন্তু বেশ নাছোড়বান্দা। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর এ বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।

উচ্চ আয়ের দেশগুলোর তুলনায় নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে সিসার দূষণের ব্যাপকতার বেশ অনেকগুলো উৎস আছে। যেমন ধরা যাক, শিল্পক্ষেত্রে সিসার ব্যবহার। বাংলাদেশসহ অন্যান্য নিম্ন আয়ের দেশে শিল্পকারখানাগুলোয় সিসার ব্যবহার এখনো ব্যাপক প্রচলিত, সঙ্গে পর্যাপ্ত ধারণক্ষমতা, নিরাপত্তাজনিত নিয়মকানুনের অব্যবস্থাপনা আর অবকাঠামোগত দুর্বলতা তো আছেই। শিল্পক্ষেত্রে, ব্যবহৃত সিসা অ্যাসিড ব্যাটারির রিসাইকেল হচ্ছে গ্রাম ও মফস্‌সলে বিষাক্ত সিসা ছড়িয়ে পরার সবচেয়ে সহজলভ্য উৎস।

এখন পর্যন্ত, টক্সিক সাইট আইডেন্টিফিকেশন প্রোগ্রাম (টিএসআইপি) ৩৬০টিরও বেশি ব্যবহৃত সিসা অ্যাসিড ব্যাটারি রিসাইক্লিং সাইট খুঁজে বের করেছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের মতে, এই সংখ্যা ১ হাজার ১০০টিরও বেশি, যা মোটের ওপর কোটিখানেক মানুষকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে। এসব রিসাইক্লিং সাইট পরিত্যক্ত হলেও আশপাশের মানুষ অনিশ্চিত ঝুঁকির মুখে থেকে যায়। অনেক সময় এর ব্যাপকতা এর চেয়েও অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পরার আশঙ্কা থাকে। ব্যবহৃত সিসা অ্যাসিড ব্যাটারি রিসাইক্লিং সাইটগুলো কর্মীদের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর, বিশেষত শিশুশ্রমিকদের জন্য। কেননা, ব্যাটারি রিসাইক্লিং খাতে এক–চতুর্থাংশই শিশুশ্রমিক।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে মিল রেখে, বাংলাদেশও নাগরিকদের দাবির ভিত্তিতে রঙে সিসার ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। তারপরও এই নিষেধাজ্ঞার আওতা খুবই সীমিত। বাংলাদেশে যে পরিমাণ রং বিক্রি হয়, এর ৩০ শতাংশে এই বেঁধে দেওয়া মানদণ্ডের চেয়ে বেশি সিসা পাওয়া যায়। কিছু ক্ষেত্রে খুবই উচ্চমাত্রায় পাওয়া যায়, যা মানদণ্ডের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি। তারপরও রঙে সিসার মাননিয়ন্ত্রণ ও আইনের মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞা জোরদার করার চেষ্টা চলছে।

ইদানীং মসলায়, বিশেষ করে হলুদে সিসা মেশানোর বিষয়টি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মহলের নজরে এসেছে। অতি সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, হলুদে লেড ক্রোমেটের ব্যাপক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ব্যবহার হয়, যাতে হলুদ আরও উজ্জ্বল দেখায়। এতে হলুদ মানে ভালো মনে হয়, বিক্রিও হয় ভালো। ভেজাল হলুদের আর রক্তে সিসার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার যোগসূত্র আরও আগেই চিহ্নিত করা হয়েছিল।

সরকারি কর্তৃপক্ষও এই সমস্যা নিরসন করতে উৎসাহী। এরই ধারাবাহিকতায়, ২০২০ সালে, বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ লেড ক্রোমেটের আমদানির ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। দাবির সঙ্গে জানাতে চাই, সরকারের উচিত বাংলাদেশ এবং অন্যত্র লেড ক্রোমেট আমদানির ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া, যাতে এই সমস্যা পুরোপুরি মিটে যায়। ভেজাল মেশানো বন্ধ করতে খুব দ্রুতই হলুদে সিসা আছে কি না, তা যাচাই-বাছাই করার প্রচলন চালু করা। একই সঙ্গে যারা হলুদ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত তাদেরও সিসাদূষণের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে আরও সচেতন করতে হবে। ভোক্তাদেরও হলুদের প্রক্রিয়াজাতকরণ নিয়ে ওয়াকিবহাল করতে হবে।

জেনে থাকা ভালো যে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের নানা জিনিসেও সিসা পাওয়ার আশঙ্কা আছে, যেমন স্থানীয় প্রসাধনী, প্রচলিত হারবাল ওষুধ, খেলনা, অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়িপাতিল, তাবিজ ও গয়নায়। যদিও ২০২২ সালে দেশব্যাপী এসব পণ্যের ওপর এক গবেষণায় কিছু ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক সিসাদূষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে, তারপরও জাতীয়ভাবে সিসাদূষণের এত ব্যাপকতার ওপর এ পর্যন্ত খুব সীমিত গবেষণা হয়েছে। এই গবেষণা আরও বিস্তৃত করতে হবে। এ জন্য সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিতে হবে।

বাংলাদেশে সিসাদূষণের বহু উৎস রয়েছে এবং উৎস থেকে দূষণ–সম্পর্কিত জ্ঞান খুব সীমিত। উচ্চ আয়ের দেশগুলোর তুলনায় নিম্ন আয়ের দেশে সিসাদূষণ খুব সাধারণ। আমাদের পুষ্টিগত ও পরিবেশগত অবস্থান সিসাদূষণকে আরও ত্বরান্বিত করে। আমাদের পুষ্টির ঘাটতি, বিশেষ করে ক্যালসিয়াম এবং আয়রনের ঘাটতি শরীরে সিসা শোষণের ক্ষমতা বাড়ায় এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল করে দেয়।

২০২২–এর গবেষণার ফলাফল থেকে অনেকগুলো সুপারিশ বিবেচনায় নিতে হবে। শিশুর খাবারে পুষ্টিমান বৃদ্ধি করা, আয়রনের ঘাটতি পূরণ করা, সামাজিক ও পারিবারিক অঙ্গনে সচেতনতা তৈরি করা এবং শিশুর আশপাশ থেকে সিসার উৎস সরিয়ে নেওয়া। জাতীয় তথ্যকেন্দ্রে ব্লাড লেড লেভেল বা বিএলএলের তথ্য সংযুক্ত করলে ‘পর্যবেক্ষণ, মূল্যায়ন ও গবেষণার মাধ্যমে নীতি প্রণয়ন ও কর্মপ্রণালি তৈরি এবং বাস্তবায়ন’ করতে সুবিধা হবে। তাই, আমাদের সিসার সংস্পর্শে আসা কমাতে এবং জাতীয় পর্যায়ে সরকারের নীতি বাস্তবায়নে সব সময় সচেষ্ট থাকতে হবে। এই সিসাদূষণ নিয়ন্ত্রণে এলে আমাদের শিশুদের বিকাশ স্বাভাবিক হবে। কারণ, সিসাদূষণ শিশুদের মানসিক বৃদ্ধি উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে। সিসাদূষণ পুরোপুরি বন্ধ হলে না আমাদের শিশুরা বুদ্ধিবলে বাড়ন্ত হবে।

ডা. মাহফুজার রহমান বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর, পিওর আর্থ

  • Facebook
  • Twitter
  • Print

| আরও পড়ুন

  • মুক্তভাষ ডেস্ক

হাসিনার পতন এবং অতঃপর

  • মুক্তভাষ ডেস্ক

সলিমুল্লাহ খানের চোখে আহমদ ছফা

  • মুক্তভাষ ডেস্ক

এক অদম্য মেধাবী ছাত্রের করুণ পরিণতির কথা

  • মুক্তভাষ ডেস্ক

“মা তোর বদনখানি মলিন হলে”

  • মুক্তভাষ ডেস্ক

বৈষম্যবিরোধী সরকারের বৈষম্য

  • নীতিমালা
  • সার্কুলেশন
  • আমাদের সম্পর্কে
  • মুক্তভাষ ফাউন্ডেশন
  • সংযুক্ত হোন
  • নীতিমালা
  • সার্কুলেশন
  • আমাদের সম্পর্কে
  • মুক্তভাষ ফাউন্ডেশন
  • সংযুক্ত হোন
স্বত্ব © ২০২২ মুক্তভাষ ফাউন্ডেশন |
সম্পাদক: ড. সাহেদ মন্তাজ,
প্রকাশক: ড. মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক